Search This Blog

Saturday, June 6, 2020

নৌকাযাত্রা

                                নৌকাযাত্রা 
                           রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর



সংক্ষেপে আমরা যেভাবে পড়বো    
                           
                ** প্রথমেই কবি পরিচিতি পড়ে নেব।
           ** গল্প/কবিতা টি স্পষ্ট উচ্চারণ সহ বারবার পড়বো।
           ** অজানা শব্দের শব্দার্থ গুলো মুখস্থ করব।
           ** বানান ও হাতের লেখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেব।
           ** অবশেষে অনুশীলনী র প্রশ্ন গুলোর উত্তর করব।
           ** এই ওয়েবসাইট এ কিছু online mock test দেব।

এবার শুরু করা যাক আজকের পড়া ঃ

    কবি পরিচিতি                
                  কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের জন্ম ইং ১৮৬১ খ্রিঃ , মৃত্যু ইং ১৯৪১ খ্রিঃ ।
            কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন তিনি। পিতা- দেবেন্দ্র নাথ ঠাকুর,
মাতা- সারদা দেবী। সহজ পাঠ, কথা ও কাহিনী , রাজর্ষি, ছেলেবেলা, শিশু, শিশু ভোলানাথ, হাস্যকৌতুক, ডাকঘর, গল্পগুচ্ছ - তাঁর অন্যতম রচনা। 
            তিনি ছিলেন বাংলা ভাষার একজন শ্রেষ্ঠ গীতিকার ও সুরকার।তাঁর রচিত গানগুলো গীতবিতান নামক বইতে রয়েছে।
            ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি গীতাঞ্জলি কাব্য রচনার জন্য নোবেল পুরস্কার পান। ভারত ও বাংলাদেশের
জাতিয় সঙ্গীত তাঁরই রচনা।
            পাঠ্য পুস্তকের নৌকাযাত্রা কবিতাটি তাঁর শিশু বই থেকে নেওয়া হয়েছে ।

                                                         
         এবার আমরা কবিতার প্রথম স্তবকটি পড়া শুরু করব।

       

         প্রথম স্তবক থেকে অজানা কিছু শব্দার্থ ঃ      

                  মাঝি-  নৌকার চালক বা নৌকা যে চালায়       
                  বোঝাই করা-  ভর্তি করা
                  কেবল -  শুধু
                  পাট-  এক ধরনের তন্তু জাতীয় শস্য
                             (এখানে পাট বলতে পাট গাছের 
                              আঁশকে বোঝানো হয়েছে)
                   দাঁড় -  যা দিয়ে নৌকা চালানো হয়
                   আঁটি -  আটকায়, বা লাগায়
                   পাল-  কাপড়ের তৈরি পর্দা বিশেষ যার 
                              সাহায্যে বাতাসের গতিকে কাজে
                               লাগিয়ে নৌকা চালানো হয়
                   হাট-   জিনিষ কেনা বেচা করার জাইগা।
                              সাধারনত সপ্তাহের নির্দিষ্ট এক বা
                              একাধিক দিনে হাট বসে থাকে।
                   পার-   পার হওয়া, বা পেরিয়ে যাওয়া  


           কবিতাটির প্রথম স্তবকটি পড়ে আমরা যা বুঝলাম 
              মধু নামক মাঝিটির নৌকাটি রাজগঞ্জের ঘাটে বেঁধে রাখা আছে। নৌকাটিতে পাট
          ভর্তি করে রাখা আছে। সেই কারনে নৌকাটি কারুর কোন কাজে লাগছে না।সেই নৌকাটি 
          দেখে একটি শিশুর মনে সেটি পাবার জন্য ইচ্ছে  জাগে। এখানে কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর 
          নিজের মনের ইচ্ছে সেই শিশুর মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। কবিতায় বলা হয়েছে যে শিশুটি
          যদি নৌকাটি পায় তাহলে, প্রথমেই সে তাতে একশো টা দাঁড় লাগাবে ও চারটে ,পাঁচটা ,ছটা 
          পাল তুলে দেবে। তারপর সেই নৌকা নিয়ে সে হাটে বাজারে ঘুরে বেরিয়ে সময় নষ্ট করবে
          না। বরং , সেই নৌকাটি করে সে একটি বারের জন্য সাত সমুদ্র ও তেরো নদী পার হয়ে 
          যাবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

    
          কবিতার প্রথম স্তবকের ক্লাসের সংক্ষিপ্ত ভিডিও



                                                                                  
    প্রথম স্তবক থেকে কিছু প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হল 

সমস্ত প্রশ্নর উত্তর ছাত্র ছাত্রী রা নিজেরা করার চেষ্টা করো। উত্তর নীচে দেওয়া আছে,উত্তর তোমরা নিজেরাই মিলিয়ে নাও। 
(এক্ষেত্রে অভিভাভক/অভিভাবিকা দের সহায়তা একান্ত কাম্য) 


           **১)  নৌকাযাত্রা কবিতাটি কার লেখা ? 
           **২)  কবিতাটি কোন বই থেকে নেওয়া হয়েছে ?
           **৩)  এই কবিতায় যে মাঝির কথা বলা হয়েছে তছের নাম কি ?
           **৪)  মধু মাঝির নৌকা খানা কোথায় বাঁধা আছে ?
           **৫)   নৌকাটিতে কি রাখা আছে ?
           **৬)  নৌকাটি পেলে শিশুটি তাতে কতগুলি দাঁড় ও কতগুলি পাল লাগাবে ?
           **৭)   নৌকাটি পেলে শিশুটি কি করবে ?
          **৮)  নৌকাটি করে শিশুটির কোথায় যাবার ইচ্ছা ?
          **৯)  পাল ও দাঁড় নৌকার কি কাজে লাগে ?
          **১০)  হাট বলতে কি বোঝ ? 
                                                     
                                                        
     
                                                             উত্তর 

         **১)  নৌকাযাত্রা কবিতাটি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ।
        **২)  কবিতাটি "শিশু" বই থেকে নেওয়া ।।
        **৩)  এই কবিতায় যে মাঝির কথা বলা হয়েছে তার নাম মধু ।
        **৪)  মধু মাঝির নৌকা খানা রাজগঞ্জের ঘাটে বাঁধা আছে ।
        **৫)  নৌকাটিতে পাট ভর্তি করে রাখা আছে ।
       **৬)  নৌকাটি পেলে শিশুটি একশোটা দাঁড় ও চারটে-পাঁচটা-ছ'টা পাল লাগাবে ।
        **৭)  নৌকাটি পেলে শিশুটি প্রথমেই তাতে একশোটা দাঁড় ও চারটে-পাঁচটা-ছ'টা পাল লাগাবে,                          তারপর সেই নৌকা করে সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে নতুন রাজার দেশে যাবে ।
       **৮)  নৌকাটি করে কবিতার শিশুটির সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে নতুন রাজার দেশে যাবার 
               ইচ্ছা ।
       **৯)  "দাঁড়ের" সাহায্যে নৌকা চালানো হয়, আর "পালের" সাহায্যে বাতাসের গতিকে কাজে 
              লাগিয়ে নৌকার গতি বাড়ানো হয়। 
     **১০)  সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে বসে এমন বাজার কে "হাট" বলে ।
                 
  
বিপরীত শব্দ

বাঁধা - খোলা 
বোঝাই - খালি
মিথ্যে - সত্যি
আঁটি - খুলি
তুলে - নামিয়ে

সমার্থক শব্দ

মাঝি - কাণ্ডারি 
সমুদ্র - অর্ণব, জলধি, সাগর 
নৌকা - তরী, জলযান 
নদী - প্রবাহিনী, তটিনী, তরঙ্গিনী  

শব্দ যুগলের অর্থ পার্থক্য দেখাও

বাধা - প্রতিরোধ 
                বাঁধা - বাঁধন, বা বেঁধে রাখা 

পার - পেরোনো 
                   পাড় - কিনারা, বা নদীর কুল


এবার আমরা কবিতাটির দ্বিতীয় স্তবকটি পড়া শুরু করব ঃ

          দ্বিতীয় স্তবক থেকে কিছু শব্দার্থ দিয়ে দেওয়া হল 

              কোণে - প্রান্তে (এখানে কোণে বলতে ঘরের কোন এক প্রান্তকে বোঝানো হয়েছে)

              রাজপুত্র - রাজার ছেলে
              সোনা - স্বর্ণ 
              মানিক - এক প্রকার রত্ন বিশেষ 





    অর্থাৎ, কবিতাটির দ্বিতীয় স্তবকটি  পড়ে আমরা যা জানলাম 
                 শিশুটি তার মা কে ঘরের এক কোণায় বসে মন খারাপ করে একা একা বসে কাঁদতে বারুন
করছে । কারন, সে রামের মতো দীর্ঘ চোদ্দ বছরের জন্য তার মা কে ছেড়ে বনবাসে চলে যাচ্ছে না । 
সে রাজপুত্রের মতো নৌকা ভর্তি করে সোনা মানিক নিয়ে বাণিজ্য করতে যাচ্ছে । তাছাড়া, তার এই যাত্রাপথে সে একা যাবে না। তার দুই- বন্ধু আশু ও শ্যাম থাকবে তার  সাথে । সেই কারনে সে তার মা কে শুধু শুধু চিন্তা করে কাঁদতে মানা করছে। 
                দ্বিতীয় স্তবক থেকে কিছু প্রশ্ন উত্তর 

 (সমস্ত প্রশ্নর উত্তর ছাত্রছাত্রী রা নিজেরা করার চেষ্টা করবে। উত্তর নীচে দেওয়া আছে, তোমরা নিজেরাই উত্তর মিলিয়ে নাও।   এক্ষেত্রে অভিভাবক/অভিভাবিকা দের সহায়তা একান্ত কাম্য

             **১)    রামকে বনে যেতে হয়েছিল কেন ?
             **২)   রামকে কত বছরের জন্য বনবাসে যেতে হয়েছিল ?
             **৩)   শিশুটি নৌকা করে কি নিয়ে যাবে ?
             **৪)  যাত্রাপথে শিশুটির সঙ্গি কে থাকবে ?
             **৫)  শিশুটি তার মা কে কাঁদতে বারুন করেছে কেন ?
             **৬)  রামচন্দ্রের কাহিনী কোন বই পড়লে জানা যায় ?
             **৭) রাজপুত্র, সোনা-মানিকের কথা কোন বই পড়লে জানা যায় ?
             **৮)  নৌকাযাত্রা কবিতায় কে কাকে কাঁদতে বারুন করেছে ? 
 


                                                               উত্তর 



               **১)  রাম কে পিতৃসত্য পালনের জন্য বনে যেতে হয়েছিল ।
               **২)  রাম চোদ্দ বছরের জন্য বনবাসে গিয়েছিল । 
               **৩)  শিশুটি নৌকা করে সোনা মানিক নিয়ে যাবে ।
               **৪)  যাত্রাপথে শিশুটির সঙ্গি হবে তার দুই বন্ধু আশু ও শ্যাম ।
               **৫)  শিশুটি তার মা কে কাঁদতে বারুন করছে কারন , সে রামচন্দ্রের মতো চোদ্দ বছরের                               জন্য বনবাসে যাচ্ছে না। সে যাচ্ছে মাত্র এক বারের জন্য বাণিজ্য করতে। তাছাড়া, সে                           রাজপুত্র হয়ে সোনা মানিক ভর্তি নৌকা করে যাত্রা করবে । শুধু তাই নয় যাত্রা পথে                               আশু ও শ্যামও থাকবে তার সাথে ।
              **৬)  রামচন্দ্রের কাহিনী রামায়ণ বই পড়লে জানা যায় ।
              **৭)  রাজপুত্র, সোনা মানিকের কথা রূপ কথার বই পড়লে জানা যায় ।
              **৮) নৌকাযাত্রা কবিতায় শিশুটি তার মা কে কাঁদতে বারুন করেছে ।
   


       বিপরীত শব্দ 

রাজপুত্র- রাজকন্যা 
ভরা- খালি
আমরা- তোমরা


সমার্থক শব্দ 

সোনা- স্বর্ণ, কনক
বন - জঙ্গল, অরণ্য 
মা - মাতা, জননী 

শব্দ যুগলের অর্থ পার্থক্য 

কোণে - প্রান্তে
                      কনে - বিয়ের পাত্রী, নববধূ 



এবার আমরা তৃতীয় স্তবকটি পড়া শুরু করব। 


তৃতীয় স্তবক থেকে কিছু শব্দার্থ নীচে দেওয়া হল 

তিরপূরনির ঘাট- একটি ঘাটের নাম
তেপান্তরের মাঠ- লোক কথায় কথিত মাঠ বিশেষ
মাঠ- প্রান্তর, ময়দান
গল্প- কাহিনী 






অর্থাৎ কবিতার তৃতীয় স্তবকটি পড়ে আমরা যা জানলামঃ 
             শিশুটি তার দুই বন্ধুকে সাথে নিয়ে সোনা মানিক ভরা নৌকাটি ভোরের বেলায় ছেড়ে দেবে । 
দেখতে দেখতে সে অনেক দূরে ভেসে চলে যাবে। দুপুর বেলায় তার মা যখন পুকুর ঘাটে থাকবে, তখন শিশুটি নতুন রাজার দেশে পৌঁছে যাবে । তিরপূরনির ঘাট আর তেপান্তরের মাঠ পার করে সে পৌছবে নতুন রাজার দেশে। তারপর সন্ধে বেলায় সে ফিরে আসবে তার মায়ের কাছে। বাড়ি ফিরে আসার পর শিশুটি তার মায়ের কোলে বসে মা কে যাত্রাপথের সমস্ত ঘটনা গল্পর আকারে বলবে। 


তৃতীয় স্তবক থেকে কিছু প্রশ্ন উত্তর

(সমস্ত প্রশ্নর উত্তর ছাত্র- ছাত্রী রা নিজেরা করার চেষ্টা করবে। উত্তর নীচে দেওয়া আছে । তোমরা নিজেরাই নিজেদের উত্তর মিলিয়ে নাও।এক্ষেত্রে অভিভাবক/অভিভাবিকা দের সহায়তা একান্ত কাম্য)

**১) নৌকাটি কখন ছাড়া হবে ?
**২) শিশুটি কখন নতুন রাজার দেশে পৌছবে ?
**৩) শিশুটি যখন নতুন রাজার দেশে পৌছবে তখন তার মা কোথায় থাকবে ? 
**৪) নতুন রাজার দেশে যেতে পথে কি কি পরবে ?
**৫) শিশুটি কখন ফিরে আসবে ?
**৬) ফিরে এসে শিশুটি কি করতে চায় ?
**৭) শিশুটি সাত সমুদ্র তেরো নদী কতবার পার হতে চায় ?
**৮) নতুন জায়গা থেকে ফিরে এসে সে তার মা কে কিভাবে গল্প শোনাবে ?
 


উত্তর

**১) নৌকাটি ভোরের বেলায় ছেড়ে দেওয়া হবে ।
**২) শিশুটি দুপুর বেলায় নতুন রাজার দেশে পৌছবে ।
**৩) শিশুটি যখন নতুন রাজার দেশে পৌছবে তখন তার মা পুকুর ঘাটে থাকবে ।
**৪) নতুন রাজার দেশ যেতে পথে তিরপূরনির ঘাট ও তেপান্তরের মাঠ পরবে । 
**৫) শিশুটি সন্ধ্যে বেলায় ফিরে আসবে ।
**৬) শিশুটি ফিরে আসার পর মায়ের কোলে বসে মা'কে যাত্রাপথের গল্প বলতে চায় ।
**৭) শিশুটি সাত সমুদ্র তেরো নদী একবারের জন্য পার হতে চায় ।
**৮) নতুন জায়গা থেকে ফিরে এসে সে তার মায়ের কোলে বসে মা'কে গল্প শোনাবে । 


বিপরীত শব্দ

সন্ধ্যে- সকাল
দেশে- বিদেশে 
নতুন- পুরাতন 


শব্দ যুগলের অর্থ পার্থক্য

ছ'টা - সময়
  ছটা - শোভা 

দেশ - রাষ্ট্র 
 দ্বেষ - ঘৃণা  
    
             

7 comments:

  1. That is very helpful..thank you ❣️☺️

    ReplyDelete
  2. Thank you for the answers 🙌☺️

    ReplyDelete
  3. This is very helpful class 👌👌

    ReplyDelete
  4. নৌকা যাত্রা কবিতাটি সারমর্ম

    ReplyDelete
  5. ক্ষমতা থাকলে সব হয়

    ReplyDelete